পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ইলেকট্রন না থাকা সত্ত্বেও তেজস্ক্রিয় মৌলের পরমাণু থেকে বিটা কণা রূপে ইলেকট্রন নির্গত হয় কীভাবে?

তেজস্ক্রিয়তা একটি নিউক্লিয় ঘটনা অর্থাৎ তেজস্ক্রিয়তা পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে সংঘটিত হয়। তেজস্ক্রিয়তার জন্য নিউক্লিয়াসের বহিঃস্থ কক্ষপথে আবর্তনরত ইলেকট্রন দায়ী নয়।

আবার আমরা জানি, পরমাণুর নিউক্লিয়াসে থাকে শুধুমাত্র প্রোটন এবং নিউট্রন কণা – অর্থাৎ ইলেকট্রনের সেখানে অস্তিত্ব নেই।
কিন্তু, তেজস্ক্রিয়তা ধর্মের জন্যই পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে বিটা (β) কণা নির্গত হয় যা প্রকৃতপক্ষে ইলেকট্রন।

আরও পড়ুন – মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণির ত্রুটি

এখন প্রশ্ন হল, তেজস্ক্রিয়তা নিউক্লিয় ঘটনা হলে নিউক্লিয়াসে ইলেকট্রনের অস্তিত্ব না থাকা সত্ত্বেও কিভাবে সেখান থেকে বিটা (β) কণারুপে ইলেকট্রন নির্গত হবে? এই প্রশ্নের উত্তর নিচে ব্যাখ্যা করা হল –

১ টি নিউট্রন থেকে ৩ টি কণা তৈরি হচ্ছে – প্রোটন, ইলেকট্রন ও অ্যান্টিনিউট্রিনো

আসলে, তেজস্ক্রিয় পরমাণুর নিউক্লিয়াস থেকে যখন β (বিটা) কণা নিঃসৃত হয় তখন একটি নিউট্রন বিভাজিত হয় এবং উৎপন্ন হয় নিম্নলিখিত কণাগুলি –

  • ১ টি প্রোটন
  • ১ টি ইলেকট্রন
  • ১ টি অ্যান্টিনিউট্রিনো * (এমন এক অব-পারমাণবিক কণা, যার ভরও নেই, আধানও নেই)।

β (বিটা) কণা নিঃসরণের সময় নিউট্রন বিভাজিত হয়ে যেসব কণা উৎপন্ন হয় তার মধ্যে প্রোটনটি নিউক্লিয়াসের মধ্যে থেকে যায় এবং উৎপন্ন ইলেকট্রন টি বিটা (β) কণা রূপে বেরিয়ে আসে।

আশা করা যায়, পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ইলেকট্রন না থাকা সত্ত্বেও তেজস্ক্রিয় মৌলের পরমাণু থেকে বিটা কণা রূপে ইলেকট্রন নির্গত হয় কীভাবে এই প্রশ্নের উত্তর শিক্ষার্থীদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে।

  • ১৯৪৬ সালে বিটা কণা পরীক্ষা-নিরিক্ষা করার সময়তেই Pontecorvo নামের এক ইতালিবাসী বিজ্ঞানী অ্যান্টিনিউট্রিনোর অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন।

2 thoughts on “পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ইলেকট্রন না থাকা সত্ত্বেও তেজস্ক্রিয় মৌলের পরমাণু থেকে বিটা কণা রূপে ইলেকট্রন নির্গত হয় কীভাবে?”

  1. আমরা জানি বিপরীত ধার্মি আধান পরস্পরকে বিকষ করে। তাহলে 1 টি নিউট্রন ভেঙে যে electron ও proton উৎপন্ন হয়। ওই electron টি পরমাণুর মধ্যে থাকা ধনাত্মক আধান যুক্ত proton দ্বারা আকর্ষীত না হয়ে beta কনা রূপে বাইরে চলে যায় কেন?

    1. নিউট্রন ভেঙে ইলেকট্রন ও প্রোটন উৎপন্ন হয়, এই উৎপন্ন ইলেকট্রন প্রোটন দ্বারা আকর্ষিত না হয়ে নিউক্লিয়াস তো বটেই, এমনকি পরমাণুরও বাইরে বিটা কণা রূপে বেরিয়ে যায় – এই ঘটনার পিছনে বেশ কিছু কারণ বর্তমান।
      ১। উৎপন্ন ইলেকট্রনের উচ্চ গতিশক্তি থাকে, এই উচ্চ গতিশক্তির কারণে ইলেকট্রন বিপরীত চার্জবিশিষ্ট প্রোটনের স্থিরতড়িৎ আকর্ষণ বল সহজেই অতিক্রম করে পরমাণুর বাইরে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
      ২। এই পক্রিয়াটি খুব দ্রুত সম্পন্ন হয় (মোটামুটি 10^-12 সেকেন্ডের মধ্যে)। তাই যে সময়ের মধ্যে প্রোটন ও ইলেকট্রন – এর মধ্যে স্থিরতড়িৎ আকর্ষণ বল কাজ করতে শুরু করে, তার আগেই ইলেকট্রন নিউক্লিয়াস থেকে অনেক দূরে চলে যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *