বায়োফুয়েল হল একধরণের নবীকরণযোগ্য জ্বালানী যা প্রাণী বা উদ্ভিদ থেকে উদ্ভূত বিভিন্ন জৈব পদার্থ থেকে তৈরি করা হয়। বায়োফুয়েল – এর সংজ্ঞা নিম্নলিখিতভাবে দেওয়া যায় –
বায়োমাস থেকে উদ্ভূত জ্বালানীকে বলা হয় বায়োফুয়েল।
যেহেতু বায়োফুয়েল তৈরি করতে জৈবিক বর্জ্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে এবং যেহেতু এর যোগান অফুরন্ত তাই বায়োফুয়েলকে নবীকরণযোগ্য জ্বালানী উৎস বা renewable energy source বলা যায়।
বায়োফুয়েলের প্রকারভেদ
বায়োফুয়েল ৪ (চার) ধরণের হয়ে থাকে –
- বায়োগ্যাস
- ইথানল
- বায়োডিজেল
- হাইড্রোজেন গ্যাস
বায়োফুয়েলের ব্যবহার
নিচে বায়োফুয়েলের কয়েকটি বাস্তব প্রয়োগ সম্পর্কে আলোচনা করা হল –
বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনে
বায়োফুয়েলের অন্যতম প্রকারভেদ বায়োগ্যাসকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে বায়োগ্যাস – এর দহনে যে তাপশক্তি উৎপন্ন হয়, তা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
প্রচলিত জ্বালানী (কয়লা) – র তুলনায় বায়োগ্যাস এর মাধ্যমে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করা বেশি পরিবেশবান্ধব, কারণ এতে গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন তুলনামূলকভাবে কম হয়।
পরিবহন:
প্রচলিত পেট্রোলিয়ামজাত জ্বালানী (যেমন: পেট্রোল বা ডিজেল) – র বিকল্প হিসাবে বায়োফুয়েল ব্যবহার করা হয়।
ইথানল:
পেট্রোলের সঙ্গে বিভিন্ন অনুপাতে ইথানল মিশিয়ে এই বিশেষ হাইব্রিড জ্বালানী প্রস্তুত করা হয়। যেসব মোটরগাড়ি বা মোটরসাইকেলে পেট্রোল ব্যবহার করা হয়, সেখানে বিশেষ ইঞ্জিনের মাধ্যমে এখন ইথানল এবং পেট্রোলের এই হাইব্রিড মিশ্রণও ব্যবহার করা হচ্ছে।
কয়েকটি প্রচলিত ইথানল জ্বালানী হল E10, E85.
E10 – হল ৯-১০% ইথানল এবং ৯০-৯১% পেট্রোলের মিশ্রণ।
E85 – হল ৫১-৮৩% ইথানল এবং ৪৯-১৭% পেট্রোলের মিশ্রণ।
বায়োডিজেল:
লড়ি বা বাসের মত যেসব পরিবহণ মাধ্যমে ডিজেল ব্যবহার করা হয়, সেসব পরিবহণ মাধ্যমে এখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডিজেলের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে নির্দিষ্ট অনুপাতের ডিজেল এবং বায়োফুয়েলের মিশ্রণ – এই মিশ্রণকে বলা হয় বায়োডিজেল।
একটি বহুল ব্যবহৃত বায়োডিজেল হল B20. B20 তে থাকে ২০% বায়োডিজেল এবং ৮০% পেট্রোলিয়ামজাত ডিজেল।
উল্লেখ্য, B20 (যাতে ২০% বায়োডিজেল থাকে) বা এর থেকে কম অনুপাতের বায়োডিজেল মিশ্রণ সাধারণ ডিজেল ইঞ্জিনেই ব্যবহার করা যায়। এর জন্য কোনো প্রচলিত ডিজেল ইঞ্জিনে তেমন কোনো পরিবর্তন করার প্রয়োজন পরে না।
তবে শুধুমাত্র মোটরগাড়ি, লড়ি বা বাসেই নয়, জলপথ এমনকি আকাশপথে পরিবহনের বিকল্প জ্বালানী হিয়াবেও বায়োফুয়েলের ব্যবহার শুরু হয়েছে।
শিল্পে প্রয়োগ
প্লাস্টিক, রাসায়নিক ইত্যাদি দ্রব্য তৈরি করার জন্য কারখানায় বায়োফুয়েল ব্যবহার করা হচ্ছে।