জ্ঞানচক্ষু গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করো:
আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পে আমরা দেখা পাই বালক তপনের। বলাবাহুল্য এই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল তপন। লেখিকা তাঁর জ্ঞানচক্ষু গল্পে বালক তপনের বিভিন্ন আবেগ, অনুভুতি, বিশ্বাস, আশা-আকাঙ্খা প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত সুচারুভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
নিচে আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পে, গল্পের মূল চরিত্র তপনের চিত্রায়ন কীভাবে করা হয়েছে, তা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করা হল –
Table of Contents
Toggleতপনের চরিত্র বিশ্লেষণ – কল্পনাপ্রবণ :
আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের যে প্রধান চরিত্র বৈশিষ্ট্য পাঠকের সামনে ফুটে উঠেছে তা হলো তার কল্পনাপ্রবনতা। বালক তপন কল্পনাপ্রবণ মনের অধিকারী। লেখকদের সম্পর্কে কোন সম্যক ধারণা না থাকায় সে কল্পনা করে যে লেখকরা সাধারণ মানুষে মতন নয়। সে ভাবে লেখকরা বোধ হয় ভিনগ্রহের কোন প্রাণী – তারা হয়তো বা আকাশ থেকে পড়া কোন জীব।
তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ – সৃজনশীল :
আশাপূর্ণা দেবী তাঁর জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনকে একটি সৃজনশীল চরিত্র রূপে উপস্থাপন করেছেন। তপনের মধ্যে সৃজনশীলতা বিদ্যমান। লেখক মেসোকে দেখে লেখক সম্পর্কে তপনের ধারণা বদলে যায়। পূর্বের ভ্রান্ত ধারণা থেকে বিচ্যুত হয়ে সে বুঝতে পারে লেখকরা আর পাঁচটা মানুষের মতোই সাধারণ মানুষ। লেখকদের সম্পর্কে তার ধারনা পাল্টে গেলে তপনের মনে বিশ্বাস জন্মায় যে সেও মেসোমশাই এর মত লিখতে পারবে। সেই বিশ্বাসমতো তপন লেখালেখিও শুরু করে দেয়।
“না না আমি বলছি—তপনের হাত আছে। চোখও আছে। নচেৎ এই বয়সের ছেলেমেয়েরা গল্প লিখতে গেলেই তো হয় রাজারানির গল্প লেখে, নয় তো—খুন জখম অ্যাকসিডেন্ট, অথবা না খেতে পেয়ে মরে যাওয়া, এইসব মালমশলা নিয়ে বসে। তপন যে সেই দিকে যায়নি, শুধু ওর ভরতি হওয়ার দিনের অভিজ্ঞতা আর অনুভূতির বিষয় নিয়ে লিখেছে, এটা খুব ভালো।”
– মেসোমশাই এই কথাগুলি থেকেই তপনের সৃজনশীলতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ – আবেগপ্রবণতা:
জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রধান চরিত্র তপন আবেগপ্রবণ। যখন সে বুঝতে পারে, নিজের লেখা জীবনের প্রথম গল্প – ‘ প্রথম দিন’ সন্ধ্যাতারা নামক পত্রিকায় ছাপা হয়েছে তখন সে আহ্লাদে আটখানা হয়ে ওঠে। আবার কিছুক্ষণ পর যখন তখন উপলব্ধি করে মেসোমশাই গল্পটি আগাগোড়া সংশোধন করে তবেই ছাপাতে পাঠিয়েছেন তখন তপন চোখের জল ধরে রাখতে পারে না।
তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ – আত্মমর্যাদা বোধ সম্পন্ন:
তপনের গল্প পড়ে লেখক মেসোমশাই গল্প সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে তার গল্প ভালোই হয়েছে, শুধুমাত্র খানিকটা কারেকশন করে ছাপাতে দিলেই হবে। মেসোমশাই এর কথাই আনন্দিত হয়ে তপন গল্প ছাপা হওয়ার দিন গুনতে থাকে।
অবশেষে একদিন গল্প ছাপা হয় এবং তপন কালির অক্ষরে ছাপা গল্প নিজের হাতে পায়। কিন্তু গল্প হাতে পেয়ে তপন আর সেই গল্প পড়তেই পারেনা – কারণ লেখক মেসোমশাই সংশোধনের নামে সেই গল্প আগাগোড়া পরিবর্তন করে তবেই ছাপাতে দিয়েছিলেন।
এই ঘটনায় তপন মনে প্রবল আঘাত পায় এবং প্রতিজ্ঞা করে – পরবর্তীকালে কোন লেখা ছাপানোর জন্য সে আর কাউকে অনুরোধ করবে না, নিজেই ছাপাতে দেবে, তাতে সেই লেখা ছাপা হোক বা না হোক।
জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন:
১। জ্ঞানচক্ষু গল্পটি কার লেখা ?
উত্তর : জ্ঞানচক্ষু গল্পটি প্রখ্যাত লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর লেখা।
২। জ্ঞানচক্ষু গল্পের মূল চরিত্র কে ?
উত্তর : আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পের মূল চরিত্র তপন।
৩। তপনের লেখা গল্পের নাম কি ছিল ?
উত্তর: তপনের লেখা গল্পের নাম ছিল প্রথম দিন।
৪। তপনের গল্প কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল ?
উত্তর : তপনের গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল
৫। তপনের মেসোমশাই কোন পত্রিকার সম্পাদক কে চিনতেন ?
উত্তর : তপনের মেসোমশাই সন্ধ্যাতারা পত্রিকার সম্পাদক কে চিনতেন।
এই নিবন্ধে প্রখ্যাত লেখিকা আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রধান চরিত্র তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আশা করা যায় যে সকল ছাত্র-ছাত্রী বা অনুসন্ধিৎসু ব্যক্তিবর্গ – জ্ঞানচক্ষু গল্প অবলম্বনে তপনের চরিত্র বিশ্লেষণ করো অথবা জ্ঞানচক্ষু গল্প অবলম্বনে তপন চরিত্রটি পরিচয় দাও ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর সন্ধান করছিলেন তার এই নিবন্ধ বিশেষ উপকৃত হবেন।
আমরা চেষ্টা করেছি প্রশ্ন-উত্তর গ্রুপে যথাযত ভাবে যথেষ্ট সহজ ভাষায় লেখার। এই নিবন্ধে যদি কোন অনিচ্ছাকৃত ভুল থেকে যায় তার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী – যদি কোন সহৃদয় ব্যক্তি এমন অনিচ্ছাকৃত কোনো ভুল খুঁজে পান তাবে তিনি এই নিবন্ধের নিচে থাকা ‘Comment’ অংশের মাধ্যমে আমাদেরকে সেই ভুল সম্পর্কে অবগত করতে পারেন।
মূল প্রশ্নটির শেষে আমরা বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত উত্তর ধর্মী প্রশ্ন এবং তার যথাযথ উত্তরসমূহ সংকলিত করেছি, যাতে যে সকল সকল শিক্ষার্থীরা মূল প্রশ্ন টি সম্পর্কে অনুসন্ধান করেছিল,তারা এই প্রশ্নগুলি সম্পর্কেও অবগত হতে পারে।
Thanks you very much sir.
This has helped me during my exam preparation.