বিখ্যাত কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত পথের দাবী উপন্যাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হল অপূর্ব। পাঠ্য বইয়ের উল্লিখিত অংশে অপূর্বের চরিত্রই সেই অংশের প্রধান চরিত্র হয়ে ধরা দিয়েছে। নিচে পথের দাবী উপন্যাসে অপূর্বের চরিত্র বিশ্লেষণ করা হল –
অপূর্বের চরিত্র – দেশ প্রেমিক :
অপূর্ব একজন দেশপ্রেমিক। পাঠ্যাংশে অপূর্ব এর চরিত্রের যে বৈশিষ্ট্য গুলি ফুটে উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম হল তার দেশপ্রেম। স্টেশনে ফিরিঙ্গি ছেলেদের কাছে যেভাবে সে অপমানিত হয়েছে তাতে সে সত্যিই ব্যথিত। অপূর্বের ‘ফিরিঙ্গি ছেলেদের’ কাছে ব্যথা পাওয়ার মধ্যে দিয়ে ফুটে উঠেছে তার দেশের প্রতি ভালোবাসা। সে চায় যে তার মাতৃভূমি পরাধীনতার বন্ধন থেকে মুক্ত হোক, তাই সে গোপনে হলেও সমর্থন জানিয়েছে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের প্রতি। পথের দাবী উপন্যাসের নির্দিষ্ট পাঠ্যাংশে দেখা যায় যে গিরিশ মহাপাত্রের রুপধারী সব্যসাচী মল্লিক এর প্রতি সে যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল।
অপূর্বের চরিত্র – আত্মসম্মানবোধ:
‘পথের দাবী’ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্বের বিভিন্ন চারিত্রিক দিকগুলির মধ্যে অন্যতম হলো তার আত্মসম্মানবোধ। অপূর্বের মধ্যে আত্মসম্মানবোধ প্রবল – তাই ফিরিঙ্গি ছেলেদের কাছে অপমানিত হওয়া এবং সেই অপমানের কথা সেশন মাস্টারের কাছে জানাতে গেলে সেখানেও অপমানিত হওয়া অপূর্বকে চূড়ান্ত ব্যথিত করেছে। ভামো যাওয়ার পথে পুলিশও অপূর্বকে অপমানিত করেছে – এই অপমান অপূর্বের আত্মসম্মান বোধ আঘাত হেনেছে।
ক্লাস ১০ এর বাংলা বিষয়ে সমস্ত ধরণের প্রশ্ন দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন
অপূর্বের চরিত্র – প্রতিবাদী :
অপূর্ব স্বভাবে শান্ত সৃষ্ট হলেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সে প্রতিবাদী। রামদাস তলওয়াকর এর কাছে সে দেশমাতৃকাবিরোধী পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছে। বর্মার সাব ইন্সপেক্টর এর আচরণের প্রতিবাদও সে করেছে।
অপূর্বের চরিত্র – সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ বোধ:
অপূর্ব যখন পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিল তখন সেখানে হাজির হয় বর্মা অয়েল কোম্পানিতে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক। তাদের মধ্যে একজনকে ‘পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট’ সব্যসাচী মল্লিক আটক করে পুলিশ স্টেশনে নিয়ে আসা হয়। পুলিশের দৃষ্টিতে গিরিশ মহাপাত্রের বেশধারী সব্যসাচীর মল্লিক ফাঁকি দিতে সক্ষম হলেও অপূর্ব-র কাছে সে ধরা পড়ে গিয়েছিল।