প্রশ্ন : শিলা জলে ভাসে – কে কোন প্রসঙ্গে একথা বলেছিল ?
Table of Contents
Toggleউত্তরের প্রথমাংশ : কে বলেছিল ?
আলোচ্য উদ্ধৃতাংশ টি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত গুরু নাটক থেকে নেওয়া হয়েছে।
‘শিলা জলে ভাসে’
– উদ্ধৃতিটির বক্তা গুরু নাটকের অন্যতম প্রধান চরিত্র মহাপঞ্চক।
উত্তরের দ্বিতীয়াংশ: প্রসঙ্গ
অচলায়তনে নামক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গুরু তার আসার সংবাদ পাঠান। এরপর থেকেই অচলায়তনে বিভিন্ন রকম অস্বাভাবিক ঘটনার সূত্রপাত হয়। ঘটনাক্রমে চণ্ডক নামে এক যূনক যুবক গোপনে মন্ত্রানুশীলন করে স্থবিরক পর্যায়ে উন্নীত হতে চায়। স্থবির পত্তনের রাজা মন্থর গুপ্ত এই সংবাদ পেয়ে চন্ডক নামক ঐ যুবকের শিরশ্ছেদ করেন। এই খবর গুরুর কানে পৌঁছায়। গুরু এও জানতে পারেন যে স্থবিরপত্তনের রাজা মন্থর গুপ্ত আরও ১০-১২ জন যূনককে ধরে নিয়ে গেছেন। এই সংবাদ পেয়ে গুরু আর অপেক্ষা করেননি। তিনি তার অনুগামীদের নিয়ে গমন করেন অচলায়তনের উদ্দেশ্যে। অচলায়তনে ঢুকে অচলায়তনের পাথরের প্রাচীর তারা ফুটো করে দেয়।
উত্তরের শেষাংশ: কেন বলেছেন
মহাপঞ্চক এর এমন উক্তি করার পেছনে যে কারণ বর্তমানে তা নিচে ব্যাখ্যা করা হল-
শিলা কথার অর্থ হল পাথর। পাথর জলের থেকে অপেক্ষাকৃত ভারী বস্তু হওয়ায় তা স্বাভাবিকভাবেই জলে নিমজ্জিত হয়। অর্থাৎ শিলা জলে ভেসে থাকা বাস্তবে সম্ভব নয়।
মহাপঞ্চক নিশ্চিত যে যূনকরা কোন প্রকারের শক্তিতেই অচলায়তনের প্রাচীর ফুটো করে অচলায়তনের প্রবেশ করতে পারবে না।
তাই যূনকরা অচলায়তনের প্রাচীর ফুটো করে দিয়েছে এহেন সংবাদ মহাপঞ্চক এর কাছে মিথ্যা বলে মনে হয়। এমন আপাত অবিশ্বাস্য সংবাদে মহাপঞ্চক স্বাভাবিকভাবেই বেশ অবাক হয়ে যান। তার ধারণা অচলায়তনে যেসব দেব-দেবীর প্রতিষ্ঠা করেন তাদের প্রভাবে অচলায়তনে যূনকদের মত নিচ কোন কখনই জাতি প্রবেশ করতে পারবে না।
নিজের কল্পিত উদ্ভট দেবদেবীর প্রতি প্রবল অন্ধবিশ্বাস এবং আপন ক্ষমতা সম্পর্কে অন্তঃসারশূন্য আত্মম্ভরিতার দরুণ মহাপঞ্চক এমন উক্তিটি করেছেন। একই সঙ্গে মহাপঞ্চক, যূনকদের ক্ষমতা সম্পর্কে তাচ্ছিল্য প্রকাশ করেছেন এই উক্তির মাধ্যমে।
সম্পর্কিত নিবন্ধ : বনভূমি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা – রচনা
বিকল্প উত্তর
শিলা জলে ভাসে – কে কোন প্রসঙ্গে একথা বলেছিল ?
উত্তরের প্রথমাংশ
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রূপকধর্মী, সাংকেতিক তত্ত্বমূলক নাটক ‘অচলায়তন” – এর সংক্ষিপ্ত সংস্করণ ‘গুরু’ নাটকে মহাপঞ্চক উদ্ধৃত কথাগুলি বলেছেন।
উত্তরের দ্বিতীয়াংশ
পাঠ ‘গুরু’ নাটকটির শেষাংশে ‘অচলায়তন’ এর দৃশ্যে অচলায়তন কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন (বিশ্বম্ভর) ব্যস্ত হয়ে অচলায়তনের নিয়ামক বিশেষ মহাপঞ্চক কে সংবাদ প্রদান করেন,
“এই যে খবর এলো শত্রুসৈন্য অচলায়তনের প্রাচীর ফুটো করে দিয়েছে।”
কিন্তু অচলায়তনের কল্পিত অসীম শক্তিশালী দেবদেবীর প্রতি অন্ধবিশ্বাসী মহাপঞ্চক এই বাস্তব সিদ্ধ ঘটনাটিকে বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করেন না। তাই মহাপঞ্চক উদ্ধৃত উদাহরণের মাধ্যমে একদিকে যেমন অচলায়তনের দেবদেবীর প্রতি অন্ধ বিশ্বা,স ও অন্যদিকে তেমনি শ্রমিক-কৃষক-অস্পৃহ্য যূনক জাতীর প্রতি অবজ্ঞা ও ঘৃনা প্রকাশ করেছেন।
উত্তরের শেষাংশ
বলার কারণ :- শিলা অর্থাৎ পাথর অপেক্ষাকৃত ভারী বস্তু হওয়ার দরুন টা জলে নিমজ্জিত হওয়াই স্বাভাবিক। তাই শিলা জলে ভাসে এমনটা বাস্তবে অসম্ভব, যূনকরা অচলায়তনের প্রাচীরে ফুটো করে দিয়েছে – অন্ধবিশ্বাস ও আপন ক্ষমতা সম্পর্কে অন্তঃসারশূন্য আত্মম্ভরিতার দরুণ যূনকদের ক্ষমতা সম্পর্কে তাচ্ছিল্য ও অবহেলা প্রকাশের উদ্দেশ্যে মহাপঞ্চক উক্তিটি করেছেন।