নদীর মধ্য এবং নিম্ন প্রবাহে সৃষ্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিরূপ হল প্লাবনভূমি বা প্লাবন সমভূমি।
নদী অববাহিকাতে বারবার বন্যা / প্লাবনের ফলে প্লাবনভূমি -র সৃষ্টি হয়।
প্লাবনের ফলে নদী অববাহিকাতে পলি সঞ্চয়ের ফলে যে উর্বর সমভূমির সৃষ্টি হয়, তাকে প্লাবন ভূমি / প্লাবন সমভূমি বলে।
প্লাবনভূমি / প্লাবন সমভূমি কিভাবে তৈরি হয়?
নদী তার নিম্নগতিতে সমুদ্রের কাছাকাছি চলে এলে ভূমির ঢাল হ্রাস পায় এবং নদীবাহিত সূক্ষ্ম কর্দম, পলি, বালি প্রভৃতি নদীগর্ভে সঞ্চিত হতে থাকে। ফলে নদীবক্ষ ভরাট হয়ে নদীর গভীরতা ক্রমশ কমে যায়। এমতাবস্থায়, বর্ষাকালে নদীতে হঠাৎ জল বেড়ে গেলে এই অগভীর উপত্যকা ছাপিয়ে নদীর দুই কূলের নীচু জমি প্লাবিত হয়। এভাবে বছরের পর বছর ধরে প্লাবিত অঞ্চলে নদীবাহিত পলি, বালি, কর্দম প্রভৃতি সঞ্চিত হয়ে ক্রমশ প্লাবনভূমি সৃষ্টি হয়।
স্বাভাবিক বাঁধ
স্বাভাবিক বাঁধ কাকে বলে?
প্লাবনভূমি -র মতোই নদীর মধ্য ও নিম্ন প্রবাহে সৃষ্ট অপর একটি ভূমিরূপ হল স্বাভাবিক বাঁধ। নদীর সঞ্চয়কার্যের ফলে স্বাভাবিক বাঁধ গঠিত হয়।
স্বাভাবিক বাঁধ কিভাবে তৈরি হয়?
নদীর মধ্যপ্রবাহে ও বিশেষত নিম্নপ্রবাহে প্রায়শই পার্শ্ববর্তী দুকূলসংলগ্ন অঞ্চল বন্যার ফলে প্লাবিত হয়। কিছুদিন পর এই প্লাবনের জল সরে গেলে নদীবাহিত পলি, বালি, কর্দম প্রভৃতি নদীর দুই তীরে সঞ্চিত হয়ে ধীরে ধীরে বাঁধের মত উঁচু হয়ে যায়। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয় বলে এই ধরনের বাঁধকে স্বাভাবিক বাঁধ বা লেভি বলে। গঙ্গা নদীর নিম্নপ্রবাহে তথা ভাগীরথী-হুগলী নদীর প্রবাহপথে, নীল নদের প্রবাহপথে স্বাভাবিক বাঁধ বা লেভি দেখা যায়।