বৈপরীত্য উত্তাপ কাকে বলে

এই নিবন্ধের আলোচ্য বিষয় বৈপরীত্য উত্তাপ। বৈপরীত্য উত্তাপ কাকে বলে জানার সঙ্গে সঙ্গে এই নিবন্ধে বৈপরীত্য উত্তাপ সৃষ্টির কারণ নিয়েও বিশদে আলোচনা করা হবে।

উত্তাপ বা উষ্ণতা কাকে বলে?

উষ্ণতা হল বস্তুর এক ভৌত ধর্ম যা নির্দেশ করে বস্তুটি কতটা গরম বা ঠান্ডা।

বৈপরীত্য উত্তাপ / বৈপরীত্য উষ্ণতা কাকে বলে

আমরা বায়ুমন্ডলের সর্বনিম্ন স্তর অর্থাৎ ট্রপোস্ফিয়ার-এ বাস করি। ট্রপোস্ফিয়ারে উষ্ণতা বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে উষ্ণতা সাধারণত কমতে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম দেখা যায়।

কিছু ক্ষেত্রে ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধি পেলেও উষ্ণতা না কমে বৃদ্ধি পায় – একে বৈপরীত্য উত্তাপ বলে

বৈপরীত্য উত্তাপ কোথায় সৃষ্টি হয়

বৈপরীত্য উত্তাপ পার্বত্য উপত্যকায় শান্ত আবহাওয়াতে সৃষ্টি হয়।

📝 দীর্ঘ, মেঘমুক্ত, শীতল রাত এবং শান্ত আবহাওয়া বৈপরীত্য উত্তাপ ঘটনা সৃষ্টির জন্য আদর্শ।

বৈপরীত্য উত্তাপ কিভাবে সৃষ্টি হয়

পার্বত্য উপত্যকায় বৈপরীত্য উত্তাপ কিভাবে সৃষ্টি হয়

রাতের বেলায় তাপ বিকিরণ করে পার্বত্য উপত্যকা সংলগ্ন বায়ূ ঠান্ডা হয়ে যায়। ঠান্ডা বায়ু অপেক্ষাকৃত ভারী হওয়ার জন্য মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে পর্বতের গা বেয়ে নিচের দিকে নেমে আসে। এর ফলে পার্বত্য উপত্যকার নিচে অবস্থিত উষ্ণ বায়ু (যার ভর অপেক্ষাকৃত কম হয়) পার্বত্য উপত্যকার উপরের দিকে উঠে আসে।

অতএব দেখা গেল, এই ঘটনার প্রভাবে পর্বতের নিচের দিকে তুলনামূলক ঠান্ডা বায়ু অবস্থান করে এবং পর্বতের উপরের দিকে তুলনামূলক গরম বায়ু অবস্থান করে – এভাবেই বৈপরীত্য উত্তাপের সৃষ্টি হয়।

আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে বৈপরীত্য উত্তাপ কিভাবে সৃষ্টি হয়

আবার, উপযুক্ত আবহাওয়া (দীর্ঘ, মেঘমুক্ত শীতল রাত এবং শান্ত আবহাওয়া) বিরাজ করলে বায়ুমণ্ডলের অন্যান্য অংশের তুলনায় ভূপৃষ্ঠ এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চল তাপ বিকিরণ করে দ্রুত ঠান্ডা হয়ে পড়ে। এর ফলে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তরও ঠান্ডা হয়ে পড়ে।

কিন্তু, ভূপৃষ্ঠের তুলনায় বায়ুমন্ডলের ওপরের অংশের তাপ বিকিরণ ক্ষমতা কম হওয়ার জন্য ওই অংশ দ্রুততাপ বিকিরণ করে ঠান্ডা হতে পারে না। ফলে, ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন অঞ্চল বেশি ঠান্ডা হয়, তুলনামূলকভাবে তার ওপরের অঞ্চল উষ্ণ থাকে। মেঘমুক্ত, দীর্ঘ, শীতল রাত এবং শান্ত আবহাওয়া বিরাজ করলে এভাবেই বৈপরীত্য উত্তাপের সৃষ্টি হয়।

পাদটীকা (Additional Footnotes:)

  • * উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা কম হওয়ার এই সম্পর্ককে বলা হয় উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার (Normal Lapse Rate of Temperature)।

বৈপরীত্য উত্তাপ কোন ধরণের আবহাওয়াতে সৃষ্টি হয়?

বৈপরীত্য উত্তাপ সাধারণত শান্ত আবহাওয়াতে সৃষ্টি হয়।

বৈপরীত্য উত্তাপ সৃষ্টি হওয়ার জন্য কী ধরণের আকাশ প্রয়োজন?

বৈপরীত্য উত্তাপ সৃষ্টি হওয়ার জন্য মেঘমুক্ত আকাশ প্রয়োজন।


এই পোষ্টে বৈপরীত্য উত্তাপ কী বা বৈপরীত্য উষ্ণতা কাকে বলে – সেই সংক্রান্ত অন্য বিষয় (যেমন – বৈপরীত্য উত্তাপ কোথায় সৃষ্টি হয়, বৈপরীত্য উত্তাপ কিভাবে সৃষ্টি হয়, বৈপরীত্য উত্তাপ সৃষ্টির কারণ, বৈপরীত্য উত্তাপ কোন স্তরে দেখা যায় ইত্যাদি) বিশদে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

আশা করা যায় অনুসন্ধিৎসু ছাত্রছাত্রীরা, যারা বৈপরীত্য উত্তাপ এবং সেই সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় –  তারা এই পোস্ট থেকে উপকৃত হবে।

যথেষ্ট চেষ্টা করা হয়েছে পোষ্টটিকে নির্ভুল ভাবে লেখার। তা সত্ত্বেও যদি কোন অনিচ্ছাকৃত ভুল পোস্টে খুজে পাওয়া যায়, তার জন্য আমরা দুঃখিত। এরকম কোন ভুল খুঁজে পেলে মন্তব্যের মাধ্যমে আমাদেরকে সেই ভুল সম্পর্কে অবগত করতে পারেন।

বৈপরীত্য উত্তাপ কি  – এই সংক্রান্ত  কোনো প্রশ্ন থাকলেও নির্দ্বিধাই মন্তব্য করতে পারেন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *